প্রকাশিত: Sat, Feb 4, 2023 3:38 PM
আপডেট: Tue, Jun 24, 2025 4:20 AM

হাওর অঞ্চলে সরিষা চাষে বিপ্লব

সালেহ্ বিপ্লব: রোপা আমন কাটার পর বোরো আবাদের আগে হাওরে সরিষার চাষ করা হচ্ছে। দুই ফসলের মাঝামাঝি সময়টা আগে পতিত পড়ে থাকতো। কৃষি বিভাগের পরামর্শে এই সময়টা কাজে লাগাচ্ছেন কৃষকরা। অল্প সময়ে, অল্প খরচে অধিক ফলন পাওয়ায় হাওর এলাকায় সরিষার আবাদ দিন দিন বাড়ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার হাওরে বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। বাসস

দেশের ৭ জেলায় ৮ লাখ ৫৮ হাজার ৪৬০ হেক্টর জায়গা জুড়ে মোট ৩৭৩টি হাওর রয়েছে। আয়তনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি হাওর রয়েছে সুনামগঞ্জে। এই জেলায় ২ লাখ ৬৪ হাজার ৫৩১ হেক্টর ভূমিতে ৯৫টি হাওর রয়েছে। এই ছাড়া সিলেটে ১০৫, হবিগঞ্জে ১৪, মৌলভীবাজারে ৩, নেত্রকোনায় ৫২, কিশোরগঞ্জে ৯৭ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৭টি হাওর রয়েছে। সরিষা আবাদে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের বিনামূল্যে সার ও বীজ দেওয়া হচ্ছে। কৃষি কর্মকর্তারা তাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সরেজমিনে গিয়ে সহায়তা করছেন। জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে কৃষকদের সঙ্গে বৈঠকও করেন কৃষি কর্মকর্তারা। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় এবার সরিষা আবাদ হয়েছে ১৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। আবাদ বৃদ্ধির পাশাপাশি বেড়েছে নতুন জাতের সম্প্রসারণ। নতুন জাতের বিনা-৯ ও বারি-১৪, ১৭ এবং ১৮ জাতের সরিষা চাষ করা হয়েছে। 

নাসিরনগরে হাওরের সরিষা চাষী আবুল কাশেম ও হোসেন মিয়া জানান, সরিষা চাষে খরচ কম। পাশাপাশি অধিক ফলন পাওয়া যায়। ফলে হাওরে সরিষার আবাদ বাড়ছে। 

কিশোরগঞ্জ জেলায় এ বছর ৯ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে। নেত্রকোনা জেলায় ৫ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। যা গত বছর ছিল ৪ হাজার ৭১৫ হেক্টর। 

এবার সিলেটে ব্যাপক হারে বেড়েছে সরিষা চাষ। জেলায় ৫ হাজার ৬৭৫ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। হবিগঞ্জ জেলায় ৪ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। মৌলভীবাজার জেলায় ৪ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। 

সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ বিমল চন্দ্র সোম বলেন, জেলায় ২ হাজার ৬২০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। এ বছর মাঠের যে অবস্থা দেখতে পাচ্ছি, তাতে মনে হচ্ছে সরিষার বাম্পার ফলন হবে।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের তৈলবীজ গবেষণা কেন্দ্রের তথ্যমতে, গতবছরের চেয়ে এবার হাওর এলাকায় ৮ শতাংশ বেশি সরিষার আবাদ হয়েছে। গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. ফেরদৌসী বেগম বলেন, এই হাওরের জমিগুলো বর্ষা মৌসুমের পরে ও বোরো চাষের আগে জমি পতিত পড়ে থাকতো। পতিত জমিগুলো কিভাবে চাষের আওতায় আনা যায় সেই লক্ষ্যে কাজ করছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের তৈলবীজ গবেষণা কেন্দ্র। এই সরিষা থেকে উৎপাদিত তেল দিয়ে তেলের ঘাটতি কমবে। দেশ থেকে আমদানিকৃত সয়াবিন তেলে যে খরচ হয় তাও কমে আসবে। সম্পাদনা: খালিদ আহমেদ